আর্টিকেল খারাপ হয়েছে! আমি শেষ, আমার ক্যারিয়ার শেষ! - কি করবো?

আমাকে যদি প্রশ্ন করেন, "কনটেন্ট রাইটার হিসেবে আপনার সব থেকে বড় ভালোলাগা কোথায় এবং কখন কাজ করে?"

আমি বলবো, "আমার লেখা কোন একটা হাই-র‍্যাংকড সাইটে পাবলিশ হলে বা নতুন কোন কনটেন্ট লেখার তিনদিন এর মাথায় দ্বিতীয় পেজের চার নাম্বার কোয়েরীতে লিংক বিল্ডিং ছাড়া শো করলে।"

এইক্ষেত্রে আমি বুঝতে পারি যে আমি যা ফলো করছি বা যে স্ট্র্যাটেজী ডেভেলাপ করেছি, সেটা কাজ করছে বা করবে অদূর ভবিষ্যতে।

এ তো গেল সাফল্যের কথা। তবে একজন লেখকের ক্যারিয়ারে শুধুই কি সাফল্য আসে? 

প্রশ্নটা আরেকটু ঘুরিয়ে করি,

"একজন লেখককে as a given বা granted ভালো লিখতেই হবে?"

What if, he falters? What if, once in a while, there's a slight dip? কিংবা, আরোও ভালোভাবে বলতে গেলে, "যদি একটি আর্টিকেল বা একটা স্ট্র্যাটেজি ওয়ার্ক আউট না করে?"

আপনি কি শেষ হয়ে যাবেন? (সিনেম্যাটিক হয়ে গেলো? এহহে! সরি!)

উত্তরঃ না। একজন লেখক যখন দেখবেন হঠাৎ করে তাঁর একটি আর্টিকেল চিরাচরিত ভালো রিসেপশন পাচ্ছেনা, তখন তাঁকে সাময়িকভাবে থেমে যেতে হবে। 

As we say in a cinematic way of things, "Take a step back, rethink your strategy." 

What will be the strategy, then? এই নিয়েই আজ Random Rants হবে। অনুপ্রেরণামূলক ভাষণও বলতে পারেন, তবে ফ্রীতে। :)

তার আগে Bo এর একটা দার্শনিক উক্তি দেখে আসি, কেমন? Bo এর ক্যাফেতে কফি খেতে খেতে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলামঃ


কখন লেখা খারাপ হয়? 

Purist বা বিশুদ্ধতাবাদীরা বলবেন, "হাসনাত ভাই, বললেন তো সমাধানের কথা; ইউটার্ন নিয়ে প্রব্লেমে যাচ্ছেন যে? ওয়ার্ড বাড়াচ্ছেন?"

না ভাই, সমস্যাটা চিহ্নিত করছি।

(সাথে আমার আরেকটা লেখার ইন্টারলিংকিং করতে ন্যাচারাল কিছু শব্দ প্রয়োজন... পড়ে যান। কাউকে বইলেন না আবার) :) 

কারণ একঃ রিসার্চ করছেন না?

"রাইটার হওন অনেক সুজা। এই এইখান থাইকা দুই লাইন নিমু, ঐখান থিকা দুড্যা। এরপর স্পিনারে ফেলমু, বা নিজের ভাঙ্গা, পাংচার ইংরেজী দিয়া চাইর লাইন বানামু। ক্লায়েন্ট রে দিমু।

পুরা প্যাকেজের নাম, দিমু 

'Premium Writing Service with the help of expert writers who know their shit better than anyone in the business. Take it or leave it.' - আজ্ঞে, এইটাও কপি করা। তয় আমি কাউরে খোচাই নি। :)  

ইন্টারনেট রিসার্চ যদি এতই সস্তা হত, রাইটার হওয়া যদি সবার সাধ্যি হত, তাহলে জর্ডান হেনেকা, ক্যারল টাইস, Kristy Hines, Brian Dean, Neil Patel, Julia McCoy - রা বছর বছর "নতুন বছরের জন্য আর্টিকেল প্ল্যান নিয়ে ব্লগ পোস্ট, ই-বুক, পডকাস্ট ইত্যাদি বের করতেন না।

যাই হোক, অনেকেই গুগলের প্রথম পেজটা দেখেন, দশটার মধ্যে সাতটা নিশ সাইটের আর্টিকেল, কোনটার ইন্ট্রো, বডি, আউট্রো ভালো লাগলে কপি মারেন। রি-ওয়ার্ডিং (Re-wording) করেন, ছেড়ে দেন। হয়ে গেল আর্টিকেল। 

"আমার নাম মাইকেল, র‍্যাংক করবে আর্টিকেল। ক্লায়েন্ট দিবে পয়সা, আমি খাবো বাতাসা (জি এফ লইয়া)। 

না! লেখা খারাপ হয় এতেই। :) 

কারণ দুইঃ অতিরিক্ত লেখার ক্লান্তি ভর করেছে? রাইটার্স ব্লক এ পড়েছেন? 

লেখা বা কনটেন্ট খারাপ হতেই পারে। এর জন্য আপনার শারিরিক অসুস্থ্যতা দায়ী হতে পারে। হতে পারে আপনার ভালো লাগছেনা লিখতে। আমাদের রাইটারদের ক্ষেত্রে যা হয়, আমাদের কাজ করতে হয় বাসায় বসে। আমার কথা বলছি। 

গুরুজনদের অফিস আছে, উনারা অফিসে বসে কফি খান আর লেখালিখি করেন।

আমি বাসায় চানাচুর আর চা খাই আর লিখি। 

যাইহোক,

আমার সাথে এমনও হয়েছে, সম্পূর্ণ ইউনিক ৪৫০ - ৫০০ শব্দের আর্টিকেল লিখেছি আমি দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত। আমার ইন্টারনেট মার্কেটিং এর গুরুর জন্য। 

Believe you me, it's a fact, not a fiction. 

একটানা লিখলে যা হয়, আপনার মাথায় একসময় অনেক শব্দ ভীড় করবে, অনেক ধরণের কনসেপ্ট আসবে। তবে সেটা আপনি পিসিতে লিখতে পারবেন না, কেননা শরীর এবং ব্রেইন একসময় তাল মিলিয়ে চলতে অস্বীকৃতি জানাবে। বা আপনি রাইটার্স ব্লকেও পড়তে পারেন। রাইটার্স ব্লক থেকে উৎরানোর উপায় আছে অবশ্যই।

কারণ তিনঃ অনেক বড় আর্টিকেল লিখছেন হয়তো! 

এটা একটা কারণ। অনেক নবীন রাইটারদেরই দেখি অ্যামাজন আর্টিকেল অ্যামাজন আর্টিকেল বলে মুখে ফেনা (বানান ঠিক হলো কি না আল্লাহ মালুম!) তুলে দেয়। 

অনেক হবু ক্লায়েন্ট আমাকে ইনবক্সে গুতা দিয়ে জিজ্ঞেস করেন, "ভাই, আপনি কি অ্যামাজনের রিভিউ রাইটার?" 

আর্টিকেল মানে কিন্তু শুধুই অ্যামাজনের জন্য কনটেন্ট না। সার্ভিস ডেসক্রাইবিং আর্টিকেল, পত্রিকায় কলাম, মার্কেটিং পিচ, ইমেইল টেমপ্লেট, নিউজলেটার, ক্রিয়েটিভ রাইটিং, ক্রিয়েটিভ গোস্ট রাইটিং, ইত্যাদিও সরাসরি বা খানেক ঘুরিয়ে এই ক্যাটাগরীতে পড়ে।  

যাই হোক,

অ্যামাজন রিভিউ লিখতে গিয়ে হালের সময়ে আমাদের (আমার সহ) যা হয়, অনেক বড় বড় আর্টিকেল লিখতে হয়।  বড় মানে বেশ বড়। ৫০০০ শব্দ ছাড়িয়ে যাবার মত বড়।

ক্লায়েন্টের স্ট্যান্ডার্ড সময় দেয়া থাকে ছয় কি সাতদিন। এর মধ্যে সম্ভব কি না এটা অন্যদিনের জন্য তোলা থাক।

তবে, এত বড় আর্টিকেল এর প্রত্যেকটা ইন্ডিপেন্ডেন্ট সেকশন "ভালোভাবে" লিখতে গেলে সময় প্রয়োজন। ডেডলাইন মেটানোর তাড়ায় আপনি একটা বা দুটো সেকশন উনিশ বিশ করে দিতে পারেন অসাবধানতায়। এই "উনিশ-বিশ" লেখার মান নামিয়ে দিতে পারে (দিতে পারে কি? দেবেই) অনেক। 

আবার অনেক বড় আর্টিকেল লিখতে গেলে ইন্ডিভিজুয়াল সেকশন একই রকম হয়ে যায় চার পাচটা আর্টিকেল এ। ফরম্যাটের কথা বলছি। আপাতদৃষ্টিতে phenomenal মনে হলেও আপনি কিন্তু মনোটোনাস একটা পিস লিখে ফেলছেন। জনগণ ধরতে না  পারলেও, আপনি জানেন, লেখা খারাপের দিকে যাচ্ছে আপনার। 

কারণ চারঃ অনেক ক্লায়েন্টের কাজ করছেন! 

মাইরেন না কিন্তু! এইবার একটু কন্ট্রোভার্শিয়াল কথাবার্তা বলি?

ফ্রীল্যান্স রাইটারদের equation খুব সিম্পল আসলে। 

More Clients = heaps of money.

[রেগে যেয়েন না ভাই, আমিও একসাথে অনেকের আর্টিকেল সামলাই। নিজের এই ক্ষুদ্র ব্লগস্পট তো আছেই, সাথে নিজের প্রোজেক্ট। আমি এবার একটা পি এস ফোর প্রো কিনবো ইন শা আল্লাহ। তাই আমাকে করতেই হচ্ছে এই কাজ।]

আমাদের সমস্যা হলো, একটা আর্টিকেল লিখে কত চার্জ করতে হবে, এই সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা আমাদের নেই বললেই চলে।  আমাদের লেখা দারুণ! We joke around, we entertain the readers, and we present them with even the tiny bits of information in our pieces. 

সবকিছু ইন্ট্রিগেট করে দারুণ piece লিখতে পারি। তবে "লেখার জন্য কত চার্জ করতে হবে?" এইটে আমরা জানিনা। বা জানলেও বলতে লজ্জা পাই। 

অত যোগ এবঃ We take the next tedious route and that's the equation I mentioned.  

সবাইকে তুষ্ট করতে গিয়ে আমাদের কাজের লোড পড়ে যায় বেশি, ফলে টেনশন কাজ করে।

আমরা ভালো লিখতে পারিনা, আখেরে কাউকেই তুষ্ট করতে পারিনা। :( 

Sad, no? কাইন্দেন না।

কারণ পাঁচঃ Instructions বোঝেন নি May Be 

অনেকে এইখানে ক্লায়েন্টকে দোষ দেয়। 

"ক্লায়েন্ট ক্লিয়ারলি ডিফাইন করতে পারেনি কি চায়? আমাদের দোষ আছে মিয়া?"

আমি  প্রথমে রাইটারের দোষ দিই। :) কেন? সেটা পরে বলবো। তবে ইন্সট্রাকশন না বুঝে লিখলে একজন পোড় খাওয়া রাইটারেরও ভুল হয়, লেখা খারাপ হয়, এটাই স্বাভাবিক।

কারণ ছয়ঃ যা লিখতে চাইছেন, কিছু Constraint বা বাধা-নিষেধের জন্য লিখতে পারছেন না

এইটা একটু প্যাচওয়ালা সমস্যা। হয়তো আপনি রিসার্চ করেছেন, তথ্য সাজিয়েছেন, লিখছেন। তবে ইন্সট্রাকশনের লিমিটেশনের কারণে হয়তো যা বলতে চাইছেন, মোর ইম্পর্টেন্টলি, যেভাবে বলতে চাইছেন, সেটা বলা হয়ে উঠছেনা।

অনেক কিছুই দায়ী হতে পারে এর জন্য। শব্দের কড়াকরি, ভাষাগত সমস্যা, বিষয়টা কাঠখোট্টা হয়তো, টার্গেট ডেমোগ্রাফিকের প্রব্লেম, কিংবা সিমপ্লি

"অধিককে অল্পে বাঁধার বৃথা চেষ্টা।" - হাসনাত ভাই 
বিশ্বাস করেন, এর জন্য অনেক সময় লেখনীর আগায় অনেক সুন্দর সুন্দর কথা এসেও থেমে যায়। তখন হয়তো আরোও সহজভাবে বোঝাতে গিয়ে I have a conventional meal each day, seven days a week with rice  and veggies. না লিখে I eat rice everyday. টাইপের কিছু লিখতে হয়।

দুটোর অ্যাপিল ভিন্ন, সৌন্দর্য্য ভিন্ন। দুটোর প্রয়োগও ভিন্ন। দ্বিতীয়টির প্রয়োজন হতেই পারে। প্রথমটারও। তবে কোনটা কখন লিখবেন, এইটা নির্ধারণ করতে পারতে হবে কিন্তু।

কারণ সাতঃ লেখা রিভিউ করছেন না!

এটা একটা মারাত্মক ভুল!

এক ছোটবোন কে বলতে শুনেছিলাম ওর দিনের সবথেকে ভালো সময় হলো চার ঘন্টা পরিশ্রমের পর একটা লেখা যখন শেষ হয়ে যায়। আর্টিকেল জমা দিতে পারলে তার রাজ্যের ক্লান্তি ভর করে শরীরে। সে যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচে। 

Quite frankly, আমিও একটা বা দুটো ক্ষেত্রে স্ল্যাক খেয়ে গেছিলাম বেশ কদিন আগে। ফলাফল যা হয় আর কি। একটা দুটো আর্টিকেল দারুণ বাজে হয়েছিলো (According to my standards). 

আমার মত অনেকেই এই ভুলটা করেন। দশদিন সময় নিয়ে এত পরিশ্রম দিয়ে আর্টিকেলটা লিখেছেন আপনি। একটাবার পড়ে নিতেই যত অ্যালার্জি। ফলাফলঃ ছোট ছোট ওয়ার্ড চুজিং এ ভুল, ডিটার্মিনার মিস্টেকস, সেন্টেন্সের ওয়ার্ড চুজিং এ মিস্টেক... Bla Bla Bla!

এত্তো এত্তো প্রব্লেম দেখে আপনারা যদি ভাবেন, "

দুনিয়ায় প্রব্লেম ছাড়া কিছু নাই," বা, "এহহে, কবিরা গুনাহ করে ফেলেছি, আর্টিকেলটা ভুল হয়েছে প্ল্যানিং এ বা লেখায়, আমার ক্যারিয়ারে কালো দাগ!"

ভুল ভাবছেন! আসেন কয়েকটা সহজ উপায়ে এগুলো কাউন্টার করি।

আর্টিকেল এবং ক্যারিয়ারের মান উন্নয়নে "মোটামুটি" অব্যর্থ কিছু Tips!

আসেন বুলেট পয়েন্ট আকারে সমস্যাগুলোর সম্ভাব্য সমাধান খোঁজার চেষ্টা করি। :) বিষয়গুলো দারুণ সোজা তবে সময় লাগে এগুলোর উপরে আমল করতে। তবে আমার মনে হয় প্র্যাক্টিস চালু করলে অল্প সময়ে অভ্যেসগুলো আয়ত্ব করা সম্ভব।


ক্লায়েন্টের সাথে "Hi, Hello" করবেন, মাঝে মধ্যেই - কারণে, অকারণে

আজ্ঞে, আপনার ক্লায়েন্টকে জ্বালান। অজনেকে মনে করতে পারে "লোকটা শিশুসুলভ" কিংবা অল্পে বোঝে না। তবে আমার কথা হলো এই ক্যারিয়ারটা আপনার। 

প্রোজেক্টে লেখালিখির মত একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ আপনি করছেন। সার্বোক্ষণিকভাবে আপনার ক্লায়েন্ট বা কো ওয়ার্কারকে প্রত্যেকটা বিষয় জানানোর অধিকার আপনার আছে। 

কেননা প্রোজেক্টের ছোট্ট কোন বিষয়ে না জানালে সেই ক্রাইসিসটা বড় কিছু  হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। সেটা আপনার ক্যারিয়ার এবং রেপুটেশন দুটোই হুমকির মুখে ফেলতে পারে। 

Iqra - মানে পড়েন - নিবন্ধের বিষয় নিয়ে পড়েন

রিসার্চ করেন। নিশ সাইটের জন্য লেখেন আর কোন নিউজপেপার এজেন্সি কিংবা অন্য কোন আইটি বা ফিজিকাল বিজনেস ফার্ম; আপনার টপিকের উপর দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। রিসার্চ মানে জেনেরিক কিছু টার্ম ওমুক রিভিউ, তমুক রিভিউ লিখে গুগলে সার্চ করে পাওয়া দশটা রেজাল্টের মধ্যে ভালোটা বেছে রিরাইট করে দেয়া নয়। 

অনেকেই এটাকে রিসার্চ বলতে পারেন। আপনি বলবেন না। :) 

রিসার্চ মানে কোন একটা টপিকে তথ্য খোঁজা। এটা প্রথম কাজ। As we say, you are just scratching the surface. তথ্য নেন, লেখার স্টাইল দেখেন, আপনার ক্লায়েন্টের কম্পিটেটর কোন কোন জায়গায় জোর দিয়েছেন, কিভাবে দিয়েছেন। আপনি কি ভালো করতে পারবেন তাঁর চেয়ে? পারলে কিভাবে?

Find out! Turn it into a series of notes. Implement it in your writing. 

আরেকটা কথা, রিসার্চ মানে "শুধুই" গুগলের প্রথম দশ রেজাল্ট দেখা নয়। অনেক ক্ষেত্রে ফলাফল Skewed হয়। আপনি যা দেখছেন তা মূলত ব্যাকলিংক এর কারসাজী। ভালো ব্যাকলিংক ওয়ালা সাইটই টপ এ থাকে। জেনারেলি সেগুলোর কনটেন্ট প্যাটার্ণ ভালো হয়। তবে সবসময় তা হবে, এমনটা নয়। 

অনেক ভালো সাইট, ভালো কনটেন্টওয়ালা সাইট দ্বিতীয় পেজ, এমনকি তৃতীয় পেজেও থাকতে পারে। Go beyond the set myth of looking into first page of Google. Go to second or third page if necessary. কি করতে হবে একজন অভিজ্ঞ লেখক টপিক বা বিষয় দেখলেই বুঝবেন।

বিরতি নেন, একটানা লিখবেন না!

আপনারা সারাদিনই লেখেন? সত্য কথা বলতে আমি প্রায় সারাদিনই লিখি। :p ঐ যে বললাম, পি এস ফোর নেবো ইন শা আল্লাহ! তাই লিখতে হয় আর কি। তবে এটা ক্ষতিকর।

টপিকে রিপিটেটিভনেস চলে আসে, সারাদিন-রাত লিখতে গেলে মানসিক ক্লান্তি, টপিকে স্কিউড ইনফর্মেশন এবং গ্রামাটিকাল ভুল হবে এইটাই স্বাভাবিক। :) 

সময় নেন। আমি দিনে পাঁচ শো শব্দের বেশি একজন ক্লায়েন্টের জন্য লেখা সাজেস্ট করিনা। পসিবল হলে আরও কম। এতে করে লেখায় ফ্রেশনেস থাকে, সবাইকে মজা দিয়ে লেখা যায়। পুরো জিনিসটা ইনফর্মেটিভ হয় এবং পড়তে ভালো লাগে।

"কিন্তু, কিন্তু, কিন্তু, ক্লায়েন্টের ডেডলাইন?" - জনৈক লেখক
ভাই, আমি বলেইছি ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলতে। বাস্তবসম্মত ডেডলাইন ফিক্স করতে হবে। পাঁচ ছহাজার শব্দের জন্য সাতটা দিন যথেষ্ট নয়। অনেক ক্লায়েন্ট হ্যান্ডেল করার সময় আরোও নয়। এইজন্যেই ক্লায়েন্টের সাথে হাই হ্যালো করবেন, কনটেন্টের উপর বেইজ করে ডেডলাইন On the Go ফিক্স করতে পারলে আরোও ভালো।

এগেইন, ক্লায়েন্ট আপনাকে মোস্ট ইম্পর্টেন্ট কাজটা দিয়েছেন। লিংক ভুল হলে ডিজাভাউ করা যায়। কনটেন্ট প্ল্যানিং, স্ট্র্যাটেজী এবং রাইটিং এ ভুল হলে ঠিক করা কঠিন। বড় আর্সটিকেল লেখার সময় টাইম নেন, ভালো করে লেখেন। আপনার সুনাম আপনার আগে দৌড়াবে। :)

 Instruction Problems - সমাধান করবেন যেভাবে

লেখার নির্দেশিকা ভালোভাবে পড়বেন। এইটা হলো গৎবাঁধা কথা। ক্লায়েন্টের সাথে প্রতিদিন, নাহলেও সাতদিন পরপর হাই হ্যালো করার সময় নির্দেশিকা নিয়ে কথাবার্তা বলেন। প্রশ্ন থাকলে অন দ্য স্পট করবেন। ক্লায়েন্টের কোয়ালিটি প্রয়োজন হলে আপনার তাঁর আর্টিকেল এর স্ট্র্যাটেজি বোঝা প্রয়োজন। এতে তিনি মাইন্ড করবেন না। :) 

আপনি যদি এক্সপেরিয়েন্সড হোন, নিজে একটা স্ট্র্যাটেজী ঠিক করতে পারেন। বিষয়গুলো কিভাবে উপস্থাপন করবেন, নতুন কোন বিষয় ইনক্লুড করবেন কি না? এটা নিয়ে প্রোপোজাল দিতে পারেন। আলোচনা করেন। আপনি এক ইঞ্চি কম্প্রোমাইজ করবেন, ক্লায়েন্ট করবেন এক ইঞ্চি (থিওরিটিকালি)। দুজনের কোয়ালিশনে একটা টপ নচ আর্টিকেল দেয়া খুবই... খুবই... খুবই সম্ভব...। প্রোজেক্টটা যতখানি ক্লায়েন্টের, ততখানি আপনার। নিজের সেরাটা দেন। 

লেখা রিভিউ করেন, প্লিজ...!

আর্টিকেল জমা দেয়ার পর অদ্ভুত একটা প্রশান্তির কথা বলেছিলাম। মনে আছে? আপাত দৃষ্টিতে দারুণ একটা অনুভূতি, সন্দেহ নেই। তাই বলে লেখা শেষ করার সাথে সাথেই জমা দেবেন? এটা ল্প্রা উচিত নয়।

আমি লেখার পাশাপাশি লেখাটা পড়ে গ্রামার কারেক্ট করি। এতে হয়তো সত্তর ভাগ লেখা এরর ফ্রী হতে পারে। তবে তিরিশ পার্সেন্ট এরর থেকেই  যায় কিন্তু। ভাগ্য অতিশয় সুপ্রসন্ন হলে (Pun intended) স্পর্শকাতর অংশগুলোতে ভুলও থেকে যায়। এই অভিজ্ঞতাও আছে। 

বিদেশী ক্লায়েন্ট হলে আপনাকে সুন্দর করে স্কাইপ কল দিয়ে বলবে "Has, you missed some bits here and there. Let's Co-Edit." 
দেশী ক্লায়েন্ট ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রেই আপনাকে জানাবেন না। গ্রুপে পোস্ট দিয়ে বলবেন, "ওমুকভাই... ঠিক... লিখেন নাই... আসলে...। অ্যাঁ? হ্যাঁ, নট অ্যাজ অ্যাডভার্টাইজড! রেকোমেন্ড করবো, তবে... ভালো মত কথা বলে নিয়েন আর কি। এই তো!" 

কথা হলো, "দোষটা লেখকের!" 

আপনি বাজে লেখা রিভিউ না করে দিবেন কেন? দরকার হলে ক্লায়েন্টের কাছে লেখার দৈর্ঘ্য অনুসারে রিভিউ করার জন্য প্রযোজ্য সময় চেয়ে নেন। নিজের লেখা রিভিউ করতে টুলজ কম, নিজের স্কিল বেশি ব্যবহার করেন। লাইন-বাই-লাইন পড়েন। 

একটা ভালো পিস যত তাড়াতাড়ি আপনার রেপুটেশন দাঁড় করাতে পারে, খারাপ লেখা তার চেয়েও তাড়াতাড়ি রেপুটেশন নামিয়ে দেবে। তাই রিভিউ করেন, ফিউচার এডিটের দরজাটা খোলা রাখেন। Be friendly with the people you are working with. 

প্রোজেক্টের লাভের অংশ যদিও আপনি নিচ্ছেন না। প্রোজেক্টটা তাও আপনার। দিনশেষে The only thing you have is an opportunity to do even better than you already are doing. Grab it with both hands.

ছোট্ট করেঃ বেশি ক্লায়েন্টের কাজ কইরেন না :( 

এইটা আপনাদের উপরে নির্ভর করে আসলে। আমি সেট ক্লায়েন্টের বাইরে খুব একটা নতুন গিগ নিই না। তার মানে এই না যে আপনারা নেবেন না। সাথে ফ্রীল্যান্স রাইটারদের একেকজনের ধারণ এবং সহ্যক্ষমতা ভিন্ন থাকে। আপনি শুধুই ক্লায়েন্টের কাজ করলে চারজনের সাথেও কাজ করতে পারেন।

ভালো ক্লায়েন্ট, ডেডলাইন বেশি পেলে দশজনের সাথেও করা যায়। তবে নিজের প্রোজেক্ট থাকলে আমি সেখানেই জোর দিতে বলবো সাথে অল্প-স্বল্প ক্লায়েন্টের গল্প। 

[আমি চাইলেও মানতে পারিনা তাই এই বিষয়ে জোর করার অধিকার আমার নাই]

কিন্তু... কিন্তু... কিন্তু... More Clients = Heaps of Money এর কি হবে?

ক্লায়েন্টের গুণিতক কমিয়ে, ভালো লিখে পার থাউজেন্ড ওয়ার্ডের পাশে গুণিতক দিন। 

Hi Five, Enjoy Life!

পরিশেষে

দেখেন, একটা আর্টিকেল লিখতে গেলে লেখক হিসেবে সেটার অনেক আঙ্গিক আপনাকে দেখতে হবে। বিষয়বস্তু কেমন, কোন অ্যাঙ্গেল থেকে রিসার্চ করলে, লিখলে অথেন্টিকালি রিডারদের তুষ্ট করতে পারবেন, কনভার্সন রেট কিভাবে বাড়বে, সাথে তথ্যের যেন ঘাটতি না হয়... ইত্যাদি।

বিষয়গুলো সহজ নয়, আজ লেখা শুরু করে কালকেই পারবেন না। আবার রকেট সায়েন্স নয়। ক্রমাগত চেষ্টা থাকতে হবে, আস্তে আস্তে এগোতে হবে। বছরের পর বছর সময় লেগে যাওয়াটা অসম্ভব নয়। তবে থেমে থাকা যাবেনা।  

চেষ্টা করলেই ভালো একটা পিস ডেভেলাপ করা যায়। চাইলেই একজন অভিজ্ঞ লেখক কনটেন্ট পরিকল্পনা করতে পারেন। সেটা বাস্তবে রুপ দেয়াটাও কঠিন নয় মোটেই। তবে আপনার চেষ্টা এবং স্কিল থাকতে হবে। 

একবার দেখেন তো, এর মধ্যে লেখার মানের কোন দিকটায় আপনার ঘাটতি রয়েছে? সেটা ঠিকঠাক পুষিয়ে নিতে পারবেন এই ধাপগুলো মেনে? নাকি  আমিই কোন কিছু ডিঙ্গিয়ে গেলাম।

জানাবেন অবশ্যই! আপনাদের নিরন্তর শুভকামনা করছি। 





Comments